মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ বলতে বুঝায় যে যার
বিষয়ে বেশি নম্বার পাবে; সেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিয়োগ পাবে। এটাই নিয়ম,
এটাই সঠিক বাস্তবতা। অথচ মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী গত ১৩/০৮/২০১৬ তারিখে ১৩তম
নিবন্ধন পরীক্ষা পরিদর্শনে এসে বললেন যে- উপজেলা ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করা
হবে। আসলে এটা কি যুক্তিযুক্ত? এই যদি হয় তাহলে তো আর মেধার ভিত্তিতে
নিয়োগ হলো না। উপজেলা ভিত্তিক নিয়োগ হলে তো মেধার বিকাশ ঘটবে না।
এক্ষেত্রে দেখা যাবে নিজ উপজেলায় একজন প্রার্থী হয়েই অত্যন্ত কম নাম্বার
পেয়েই চাকুরী পেয়েছে। মূলত নিয়োগ হওয়া দরকার সংশ্লিষ্ট বিভাগ অনুযায়ী;
তাতে প্রার্থী থাকবে বেশী এবং এতে মেধাবী শিক্ষক পাওয়া যাবে অতি সহজেই।
বিষয়টি এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষকে ভেবে দেখা উচিত!
আরও উল্লেখ করছি যে, যাদের সরকারী চাকুরীর
বয়স নেই অথচ নিবন্ধন পাশ করেছে তাদের প্রতি কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা
করছি; কেননা যাদের সরকারী চাকুরী বয়স আছে তারা আরও ভালো চাকুরীতে সরকারী
ক্ষেত্রে বা পরবর্তীতে শিক্ষকতায় আরও অনেক সুযোগ পাবে। কিন্ত যাদের সরকারী
চাকুরীর নির্ধারিত বয়স নেই; তাদের কি হবে? লেখাপড়া করে চাকুরী না পাওয়া
যে কত কষ্টের এটা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ জানে না। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ
করছি বেসরকারী শিক্ষক নিয়োগে মেধার পাশাপাশি বয়স্ক চাকুরী প্রার্থীদের
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হোক। উল্লেখ্য এই বয়স্ক চাকুরী
প্রার্থীরা শিক্ষকতা ছাড়া বাংলাদেশে আর কোথাও কোন দরখাস্ত করতে পারে না।
এটাই শেষ চেষ্টা, এটাই শেষ বার। মাননীয় শিক্ষা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি এ
ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।
আমরা জানি বাংলাদেশের এমনও সরকারী সেকশন
আছে যেগুলোতে চাকুরী নিতে নিয়োগ পরীক্ষা দিতে হয় না; শুধুমাত্র মৌখিক বা
ভাইভা পরীক্ষা নিয়েই নিয়োগ দেওয়া হয়। যেমন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ
যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া
হয় না; শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষা। আবার কিছু সরকারী চাকুরীতে শুধু লিখিত
পরীক্ষা নিয়েই নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়; উল্লেখ্য নিবন্ধন ২০০
নাম্বারের পরীক্ষা হয়। ১০০ নাম্বর প্রিলি: এবং ১০০ নাম্বার লিখিত।
এক্ষেত্রে আবার উভয় বিষয়েই আলাদা আলাদা পাশ করতে হয়। পাশের পর সনদ
দেওয়া হয়। এরকম একটা প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষা দিয়ে সনদ পাওয়া
প্রার্থীরা চাকুরী হতে বঞ্চিত হবে কেন? এটা কি শিক্ষা কর্তৃপক্ষের ভেবে
দেখা উচিত নয় ? যেহেতু নিবন্ধন সনদ প্রার্থীরা শিক্ষকতার উপযোগী; সেহেতু
তাদের সরকারী হাইস্কুল এবং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে
নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। তাতে বেকারত্বের সাথে চাকুরীতে নিয়োগ বানিজ্য
দুর হবে- সেই সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক সংকীর্ণতা হ্রাসের সাথে
মেধাবী শিক্ষক পাবে সহজেই।
পরিশেষে আর একটি বিষয় উল্লেখ করছি তা হলো
বেসরকারী স্কুল/ কলেজে এমপিওভূক্তিকরণ। আমরা জানি দীর্ঘ ৭ (সাত) বছর যাবত
এমপিওকরণ বন্ধ । কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত নিবেদন করছি আর যদি বেসরকারী
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তিকরণের ঘোষণা না করা হয় তাহলে অনুমোদন
প্রাপ্ত এসব বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইন করে বন্ধ করা হোক। অযথা এসব
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিনের পর দিন এমপিও না দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা কোন সভ্য
দেশের শিক্ষা কর্তৃপক্ষের বোধগম্য হতে পারে না। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে
অনুনেয়।
লেখক: প্রভাষক (ইতিহাস ও সংস্কৃতি), কামালের পাড়া কলেজ, পো: কামালের পাড়া, উপজেলাঃ সাঘাটা, জেলা: গাইবান্ধা।
Thanks
উত্তরমুছুন