‘ঢাকার বিভিন্নস্থানে গড়ে
উঠা কমদামি বিরিয়ানীর দোকানগুলোতে কুকুরের মাংসের বিরিয়ানী বিক্রি হচ্ছে’
এমন খবর গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ওয়ালে ঘুরপাক
খাচ্ছে। আর তাতে কুকুর জবাই করে মাংস জোগাড়ের ছবিও জুড়ে দেওয়া হচ্ছে।
স্বাভাবিক ভাবেই ভাইরাল হওয়ার পাশাপাশি দেশজুড়ে ছড়াচ্ছে আতঙ্ক।
এদিকে এই ছবি ভাইরাল হওয়ায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু নিউজ পোর্টালেও করা হয়েছে প্রতিবেদন। গতকাল শুক্রবার ভারতীয় বাংলা পত্রিকা ‘এই সময়’ প্রতিবেদনে ‘‘রাতের অন্ধকারে এই ভাবে কুকুর মেরেই কি roadside মাটন বিরিয়ানি?’ এই শিরোনামে এক সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এদিকে এই ছবি ভাইরাল হওয়ায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু নিউজ পোর্টালেও করা হয়েছে প্রতিবেদন। গতকাল শুক্রবার ভারতীয় বাংলা পত্রিকা ‘এই সময়’ প্রতিবেদনে ‘‘রাতের অন্ধকারে এই ভাবে কুকুর মেরেই কি roadside মাটন বিরিয়ানি?’ এই শিরোনামে এক সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনতে
বলা হয়, ‘চিকেনের নামে কাকের মাংস বিক্রি করার অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এবার
বিফ-মাটনের তকমা সেঁটে কুকুরের মাংস দিয়ে বিরিয়ানি রাঁধার খবরে তোলপাড়
সোশ্যাল মিডিয়া।
ঢাকা শহরের প্রায়
প্রত্যেক মোড়ে বিরিয়ানির দোকান রয়েছে। সেখানে গরু-খাসির বিরিয়ানির দাম ৯০
থেকে ১২০ টাকা প্লেট। তুলনায় অনেক কম দামে কিছু দোকানে মিলছে বলে জমে উঠেছে
বিরিয়ানির ব্যবসা। কিন্তু, গরু-খাসির বিরিয়ানি এত কম দামে কী ভাবে বিক্রি
হয়? অভিযোগ, গরু-খাসির বিরিয়ানি বলে যা বিক্রি হচ্ছে, তা রান্না হয় কুকুরের
মাংস দিয়ে।
এক ফেসবুক ইউজার কুকুর জবাই করে মাংস
সংগ্রহের ছবি যোগ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ২৮ মার্চ তারিখে পোস্ট
করা স্ট্যাটাসটি হাজার হাজার শেয়ার হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘গরু-খাসির মাংসের
বিরিয়ানি আজ থেকে হোটেলে খাওয়া বর্জন করুন। মাংস খেলে মুরগির মাংস খাবেন।
আর সবচেয়ে ভালো, মাংস বাদ দিয়ে মাছ সবজি দিয়ে খাওয়া।’
মানুষ
টাকার জন্য সব করতে পারে। দেখুন রাতে কুকুরের মাংস করার দৃশ্য ধরা পড়েছে
মোবাইল ক্যামেরায়। মানুষের মনুষত্ব, সততা আজ বিলীন। বিলীন রুচিবোধ। আমাদের
সচেতন হওয়া ছাড়া কিছুই করার নেই!’
তিনি
আরো লিখেছেন, ‘আমি বাকরুদ্ধ। বাঙালি খাচ্ছে কি? নিচে দেওয়া ছবি আপনার
পরিবারকে দেখান। আর পরবর্তীতে এই বিরিয়ানি আর খাবেন কিনা ভাবুন!’ ভাইরাল
হওয়া কুকুরের মাংসের স্ট্যাটাসের মন্তব্যে প্রায় সবাই বিস্ময় প্রকাশ
করেছেন।
জানা গিয়েছে, মাংসের জন্য
প্রতিটি কুকুর বিক্রি হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়। রাতে তিন-চারটি কুকুর মেরে
মাংস বিক্রি করলেই পকেটে আসে ১২-১৬ হাজার টাকা।’’
প্রসঙ্গত,
গেল বছরের ২৭ ডিসেম্বর নরসিংদীতে খাসির মাংস বলে কুকুরের মাংস বিক্রির
দায়ে কালাম মাসুদ নামে এক ব্যক্তিকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছিল
ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযোগ ছিল, দীর্ঘদিন
ধরে কালাম শহরের বিভিন্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্টে খাসির মাংস বলে কুকুরের
মাংস সরবরাহ করে আসছে। আর এমন খবরের ভিত্তিতে তখন শহরের চৌয়ালা এলাকায়
অভিযান চালান নরসিংদীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার সৈয়দ
সামসুল তাবরীজ। এসময় কালামকে কুকুরের মাংসসহ হাতেনাতে আটক করা হয়। তার কাছ
থেকে ১০ কেজি কুকুরের মাংস, লেজ, মাথা ও চামড়া উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ
প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
এর আগে ২০১৫ সালে রমজানে রাজধানীর গুলশানের অলিভ গার্ডেন রেস্টুরেন্টে ইফতার সামগ্রীর সঙ্গে শুকরের মাংস পাবার অভিযোগ উঠে। মান
নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং
ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) খাদ্যে ভেজাল বিরোধী অভিযানে ধরা পড়ে এ মাংস।
এই
চায়নিজ রেস্ট্রুরেন্টে রমজান মাসে বিক্রির আয়োজন করা হয়েছিলো বাহারি
ইফতারি। কিন্তু কী দিয়ে বা কোন পরিবেশে তৈরি করা হয় এসব ইফতার সামগ্রী? তখন
বিএসটিআই-এর অভিযানে তা বেরিয়ে আসে।
রাজধানীর
গুলশানে ভেজাল বিরোধী অভিযানে দেখা যায় খাবার তৈরি করা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর
ও নোংরা পরিবেশে। এরই মধ্যে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে শুকরের মাংস। পরে
ভোক্তা অধিকার আইন লংগনের দায়ে রেস্টুরেন্টকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও
অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সূত্রঃ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন